Notice Board Please Click to view Class Routine Please Click to view Gallery Please Click to view Result Please Click to view
সভাপতির বাণী
“আজ হতে শতবর্ষ পরে, কে তুমি পড়িছ বসি আমার কবিতা খানি কৌতুহল ভরে”- রুদ্রাণী বিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি পালনের কথা মনে হতেই বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিখ্যাত শ্বাসত কবিতাটির শুরুটা মনে দোলা দেয়। প্রতিষ্ঠানটি প্রথমে প্রাথমিক বিদ্যালয় রূপে ১৯০৯ খ্রি. এবং পরর্বতীতে এম.ই স্তরে উন্নীত হয় ১৯১৫ খ্রি. পরবর্তীতে ১৯৫০ খ্রি. জুনিয়র হাই স্কুল , ১৯৭৩ খ্রি. উচ্চ বিদ্যলয় এবং ২০২০ খ্রি. কলেজে উন্নিত হয় । তবে সন্দেহাতীত রূপে বলা যায়, আজ হতে শতবর্ষ পূর্বে কোন এক শুভক্ষনে এর জন্মুলগ্ন ৷
এখন সময় এসেছে বিদ্যালয়ের ভৌত কাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি শিক্ষার মানোন্নয়নের প্রতি নজর দেয়া একান্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। পদক্ষেপের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীদেরকে ক্লাসমুখী করণ, খেলাধুলার সুযোগ বৃদ্ধি সরঞ্জামাদি সরবরাহ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানাদি প্রতিপালন, বির্তক প্রতিযোগিতা, অনুষ্ঠান পরিচালনা ও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ, জাতীয় অনুষ্ঠান- দিতে শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধকরণ ইত্যাদি কর্মসূচি প্রতিপালনের মধ্যে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে উঠে দেশ গড়ার দায়িতৃ মাথায় তুলে নিতে পারে৷ সতীর্থ বন্ধুরা আমার! মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ গড়তে হলে একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা ও নেতৃত্ব প্রয়োজন ৷ ছাত্রশক্তির উন্নয়ন ছাড়া দুর্নীতিমুক্ত, বৈষম্যমুক্ত, দারিদ্রমুক্ত , সন্ত্রাসমুক্ত মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ গঠন কখনো সম্ভব নয়। একাত্তরের স্বপ্ন রূপায়নও আদৌ সম্ভব নয়। সরকারের শিক্ষানীতির সমর্থনে স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেই-তেজ ও চেতনা সৃষ্টির কোন বিকল্প নেই। প্রিয় সুধিবৃন্দ, আজ আমি আনন্দিত জুবেলী অনুষ্ঠানে আপনাদেরকে কাছে পেলুম বলে ৷ আরো পুলক বোধ করছ, অপনাদেরকে পাশে দেখে, কথা শুনে এবং আমারও দু'একটি অনুভূতি আপনাদেরকে জানাতে পেরে ৷ কারণে উপস্থিত হতে পারেননি এবং যারা প্রয়াত হয়েছেন তাঁদেরকেও যথাক্রমে ধন্যবাদ ও প্রয়াতদের আত্মার শান্তি ও মাগফিরাত কামনা করছি । আপনারা ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন ৷
অধ্যক্ষের বাণী
শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড। কাজেই সবার জন্য শিক্ষা অর্জন করা মানুষের মৌলিক অধিকার। এ অধিকারকে যথাযথভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিশ্বের অনেক দেশ আজ উন্নত দেশ হিসেবে উন্নতির চরম শিখরে আরোহণ করেছে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে সাধ্যমত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যুগের সাথে সংগতিপূর্ণ বিকাশের জন্য আমরা প্রত্যেকেই ভাবি নিজ নিজ সন্তানদের নিয়ে। প্রকৃতির সন্তান মানব শিশুকে পরিশুদ্ধ হতে হয়, পরিপুর্ণ হতে হয় স্বীয় সাধনায়। এ ক্ষেত্রে শিক্ষায় হলো আমাদের মূলমন্ত্র। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি শিক্ষার মৌলিক উদ্দেশ্য হলো আচরণের কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন। আর এ লক্ষ্যে তাদেরকে সৃজনশীল, স্বাধীন, সক্রিয় এবং দায়িত্বশীল সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা। এ জন্য প্রয়োজন যোগ্য শিক্ষকমন্ডলী এবং উপযুক্ত শিক্ষাদান পদ্ধতির সমন্বয়ে একটি শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ। আমি বিনয়ের সাথে দাবী করি রুদ্রাণী স্কুল এন্ড কলেজের এসব কিছুর সমন্বয় ঘটানো সম্ভব হয়েছে। শিক্ষার্থীদের মজ্জাগত প্রতিভা সহজে বিকাশের জন্য প্রতিষ্ঠানটিতে রয়েছে সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি কম্পিউটার শিক্ষা, সাংস্কৃতিক, আনুষ্ঠানিক, খেলাধুলাসহ নানাবিধ শিক্ষা এবং কম্পিউটার শিক্ষা ও কম্পিউটার প্রশিক্ষন ব্যাবস্থা খুবই শক্তিশালী যা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।
রুদ্রাণী স্কুল এন্ড কলেজের ওয়েবসাইটি খুলে সরকারের ডিজিটালাইজেশন কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে এবং সরকারের ভিশন ২০২১ এর সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছে। রুদ্রাণী স্কুল এন্ড কলেজের ওয়েবসাইটিতে যে তথ্য, উপাত্ত থাকবে তা অবাধ তথ্য পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করবে এবং তা সবার কাছে সহজ লভ্য হবে। এটা নিশ্চিত যে, আমাদেরকে ইনফরমেশন হাইওয়েতে উঠতে গেলে, চলতে গেলে তথ্য প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করণের মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারী দপ্তর, পরিদপ্তর ও অধিদপ্তরের কার্যক্রমে সচ্ছতা, গতিশীলতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে এবং সেবার মান উন্নত হবে ও দুর্নীতি সহনীয় মাত্রায় নেমে আসবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। পরিশেষে, রুদ্রাণী স্কুল এন্ড কলেজের ওয়েবসাইটির সফলতা ও সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত হোক এই কামনা করেই শেষ করছি।
মোঃ সাদেকুল ইসলাম
অধ্যক্ষ
রুদ্রাণী স্কুল এন্ড কলেজ
স্কুল ইতিহাস
রুদ্রাণী হাই স্কুলে ১৫ জানুয়ারি ২০২০ খ্রি. শত বার্ষিকী উদযাপন হতে যাচ্ছে এবং সেই উপলক্ষে একটি স্মরণিকা প্রকাশ করছে জেনে আমি অভ্যস্ত আনন্দিত । তবে এ শত বাষিকী উদযাপনটা হওয়া উচিত ছিল-২০১৬ ইং সালে ৷ কেননা, এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি-১৯১৫ খ্রিস্টাব্দে এম.ই স্কুল অর্থ্যাৎ মিডিল ইংলিশ স্কুল হিসেবে তদানিস্তন ব্রিটিশ সরকারের আমলে রেজিস্টার্ড ভূক্ত হয়েছিল৷ এই স্কুলটির প্রতিষ্টা সম্পর্কে বলতে গেলে সর্ব প্রথম কয়েকজন গুণি লোককে স্মরণ করতে হয়। যাদের আলাপ আলোচনায় স্কুলটি প্রতিষ্ঠার ইতিহাস জানতে পেরেছি। তাঁরা হলেন ভেড়মের শ্রদ্ধেয় মরহুম খেজমত উদ্দীন চৌধুরী, আমার পিতা মরহুম নছর উদ্দীন চৌধুরী এবং প্রতিষ্ঠাতা হেড মাস্টার স্বগীয় বাবু রমেশ চন্দ্রপাল ৷ তিনি (স্বশ্রদ্ধে) বুড়া হেড মাস্টার বলে পরিচিত ছিলেন৷ এই হেড স্যার স্বর্গীয় বাবু রমেশ চন্দ্রপাল রাজারামপুর সরফ উদ্দীন হাই স্কুলের সহকারি শিক্ষক ছিলেন ৷ মরহুম খেজমত উদ্দীন চৌধুরী রাজরামপরের সরফ উদ্দীন চৌধরীর ছেলে নরল হুদা (প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য এমপিএ ১৯৬২-'৬৪, এমএনএ ১৯৬৪ ডিসেম্বর -১৯৬৯ খ্রি) চৌধুরীর সঙ্গে একটি স্কুল করার প্রসঙ্গে আলাপ করলে শিক্ষক বাবু রমেশ চন্দ্র পালকে খেজমত চৌধুরী সঙ্গে পাঠিয়ে দেন। সেই সময়ে বর্তমান স্কুলের কোয়াটার কি.মি. পশ্চিমে ইছামতি নদীর পূর্ব দিকে সি.এন.বি রোড সংলগ্ন সাঁওতাল পাড়ার পাশে একটি বোর্ড স্কুল ছিল৷ সেই বোর্ড স্কুলটি তখন সেখান থেকে স্থানান্তরিত করে খেজমত চৌধুরীর বৈঠকখানা বা কাচারি ঘরে স্কুলটি শুরু হয় পরবর্তীতে শিক্ষক বাবু রমেশ চন্দ্র পালের পরামর্শে এবং এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সহযোগিতায় কীচা ইট দ্বারা এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি তৈরি হয়৷ যাই হোক ওই প্রসঙ্গ বাদ দিয়ে এখন স্কুলটির সার্বিক দিক কিছুটা উল্লেখ করছি। আমি দৃঢ়তার সঙ্গে উল্লেখ করতে চাই যে, আমি এই স্কুলের একজন প্রাক্তন ছাত্র (শিক্ষা বর্ষ ১৯৪৫-১৯৫১ খ্রি.) ও এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাময়িক শিক্ষক এবং ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসেবে দীর্ঘদিন অর্থ্যাৎ ১৯৭২ থেকে ১৯৮৯ ইং সাল পর্যন্ত ছিলাম এবং নিষ্ঠার সাথে কাজ করেছি। কিন্তু সেই সময় স্কুলটির খুবই নাজুক অবস্থায় ছিল কারণ, আমাদের দেশ তখন সবেমাত্র স্বাধীন বাংলাদেশ ৷ স্কুলের ঘরঘাট প্রায় সবই বিলুপ্তির পথে। স্কুলটির এই অবস্থা দেখে স্কুলের আশেপাশে খামবাসিকে ডেকে স্কুলটির পুর্নপরতিষঠা করার প্রয়াসে ১১ জন সদস্য বিশিষ্ট একটি ম্যানেজিং কমিটি গঠন করা হয়েছিল কিভাবে কর খাবে বা পা শি জানা সৎ উদ্দেশ্যে য় এ কিভাবে করা যাবে এই চিন্তায় মগ্ন থাকতাম । কথায় আছে সৎ উদ্দেশ্যে আল্লাহ্ সহায় হয়। এই মনোভাব নিয়ে কাজ করতে শুরু করলাম। আমি যেহেতু একজন সরকারি কর্মচারি ছিলাম সেই সুবাধে ডি.সি ও এ-ডি.সি ১ - ১০৮ | সকলের সাথে আমার একটি ভালো সম্পর্ক ছিল তাই উল্লিখিত ৩ (তিন) উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পর্দাপন করাতে সক্ষম হয়েছিলাম ৷ এবং তাদের দ্বারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যথেষ্ট সাহায্য পেয়েছিলাম । আমি সরকারি চাকরি করা লোক তাই সার্বক্ষনিক স্কুলের কাজের দেখাশুনা করতে পারতাম না। আমার ছোট ভাই আ্যাডভোকেট আজিজুর রহমার চৌধুরীকে স্কুলের ঘরঘাট করার এবং দেখা-শুনা করার দায়-দ্বায়িতব দিয়েছিলাম । সে তখন খুব মনযোগের সহিত দিন রাত পরিশ্রম করে স্কুলটির ঘরটির পুর্নপ্রতিষ্ঠার কাজ করেছিল যা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। সেজন্য আমি তাকে আস্তরিকভাবে দোয়া করেছিলাম । একটি কথা উল্লেখ করতে ভুলে গেছি-সেটি হলো আমি যে দৃঢ়তার সাথে বক্তব্যে উল্লেখ করেছি যে, স্কুলটি ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তার প্রমাণ স্বরুপ বলতে চাই রদ্রাণী স্কুলের বেশ কিছু গল্পের পুরাতন বই এবং পুরাতন রেজুলেশন খাতা সংরক্ষণ করেছিলাম, সেই বই গুলিতে এবং রেজুলেশন খাতায় ডিম্বাকৃত আকারে এম.ই স্কুলের সিল দেয়া ছিল, সেই সিলে উল্লেখ করা ছিল (রুদ্রাণী এম. ই স্কুল স্থাপিত-১৯১৫ ইং সাল) শুধু তাই নয় স্কুলে একটি বেশ বড় আকারের ইটের ইন্দারা ছিল। সেই ইন্দারার গায়ে (রুদ্রাণী এম.ই স্কূ স্থাপিত-১৯১৫ ইং সাল) সিল আকারে খোদাই করে লেখা ছিল। এতে বেশ প্রমাণ হয় যে, স্কুলটির-১৯১৫ খ্রিস্টাদে প্রতিষ্ঠিত । এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি স্থায়ীকরণের জন্য এবং উত্তরোত্তর উন্নতির জন্য প্রতিষ্ঠাতা হেডমাস্টার স্বীয় বাবু রমেশ চন্দ্রপাল অক্লান্ত পরিশ্রম করেছিলেন ৷ তিনি অত্র স্কুলটিকে এম.ই হতে জুনিয়র হাই স্কুল এবং পরবর্তীতে হাই স্কুল করার মানষে বহু চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি তা করতে পারেননি ।
যাই হোক, আমি কিছুদিনের জন্য এই স্কুলটিতে সহকারি শিক্ষক পদে ছিলাম তখন ১৯৬৫ সালে বহু চেষ্টা করে জুনিয়ার হাই স্কুল হিসেবে মঞ্জুরি পেয়েছিল ৷ এভাবেই স্কুলটির অগ্রগতি চলতে থাকে৷ তারপর দেশ স্বাধীন হওয়ায় ১৯৭৩ খ্রি. আমি স্কুলটি হাই স্কুলে উন্নীত করার চেষ্টা করি এবং ওই সালেই স্কুলটির মঞ্জুরি পাওয়া গিয়েছিল ৷ তারপর থেকেই স্কুলটি সুচারুরূপে চলতে থাকে পরবর্তীতে আমাদের প্রাক্তন মন্ত্রী মহোদয় মো. মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার এম.পি স্কুলের স্বর-ঘাট গুলির যথেষ্ট উন্নতি সাধন করেছেন। এ জন্য তাঁর প্রতি আমার যথেষ্ট আন্তরিক আশীবাদ রইল ৷ স্বীয় হেডমাস্টার বাবু রমেশ চন্দ্র পাল-১৯১৫ থেকে-১৯৫১ খ্রি. পর্যন্ত দীর্ঘকাল হেডমাস্টারের দ্বায়িত্ব পালন করেছিলেন ৷ আমি বছ্ পরিশ্রম করে রামচন্দ্রপুরের মোসলেউদ্দীন ভাই এবং বেতদীঘির মতিয়ার রহমান শাহ্ ভাইয়ের চরম সহযোগিতায় সংরক্ষণ করার জন্য দিয়েছি এবং প্রতিষ্ঠাতা হেডমাস্টারের একটি ছবিও বাইন্ডিং করে লাইব্রেরির দেওয়ালে লাগিয়েছি৷ উল্লেখিত মোসলেউদীন ভাই ও মতিয়ার রহমান ভাই উভয়ে অত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন ছাত্র ও শিক্ষক ছিলেন ৷ পরবর্তী- তে মতিয়ার রহমান ভাই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। আমি শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সাফল্য কামনা করছি।




